ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় ও জেনে নিন ভালো ছাত্র হয়ে জীবনে সফলতা আনার জন্য

প্রতিটি মানুষেরই মেধা রয়েছে। তবে কেউ তা ব্যবহার করে সফলতার দিকে অগ্রসর হন কেউবা তা ব্যবহার না বিফলতার দিকে ধাবিত হন।
ক্লাসের সবাই ভালো ছাত্র হতে পারেন না। আর ভালো ছাত্র হয়ে ওঠা জীবনের জন্য কতটা জরুরি এটাও কেউ বোঝেন না।
ভালো ছাত্র হওয়া তখনই সম্ভব যখন জীবনের একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে।
জেনে নিন ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় ও জীবনে সফলতা পাওয়ার উপায় :

১. লক্ষ্য ঠিক করুন :

ভালো স্টুডেন্টদের মূল্যায়ন সব জায়গাতেই হয় এবং এরা অনেক সুযোগ পেয়ে থাকেন জীবনের সফলতা অর্জনে। আপনি যদি একজর ভালো স্টুডেন্ট হতে চান তাহলে আবশ্যই আপনার জীবনের একটি লক্ষ্য তৈরি করুন। কোন পথে ঠিক কিভাবে এগোবেন সেই বিষয়ে ভাবুন। একটা গতিপথ তৈরি করুন।

২. অধ্যবসায় করুন :

ভালো স্টুডেন্ট হতে হলে আপনাকে অধ্যবসায় করতে হবে। জীবনের লক্ষ্য অনুযায়ী এগুতে গিয়ে অধ্যবসায়ের প্রয়োজন রয়েছে। ছাত্রজীবনের অধ্যবসায় আপনাকে জীবনে সফলতা এনে দেবে। কঠিন অধ্যবসায়ই আপনাকে একজন ভালো স্টুডেন্ট তৈরি হতে সহায়তা করবে।

৩. রুটিন করুন :

আপনি ছাত্রজীবনে যে ধরনের কাজ করছেন তার একটি সুনির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন। রুটিনে পড়াশুনা এবং অন্যান্য কাজের সময়গুলো হিসেব করে ভাগ করে নিন। রুটিনটিতে পড়ার সময়টুকু অবশ্যই বেশি রাখবেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে যান। এতে করে দেখবেন ফলাফল ইতিবাচক আসবে।

৪. লাইব্রেরী ওয়ার্ক করুন :

ভালো স্টুডেন্টরা লাইব্রেরী ওয়ার্ক করতে পছন্দ করেন বেশি। লাইব্রেরী ওয়ার্ক করলে খুব সহজেই কঠিন বস্তুকে আয়ত্ব করা যায়। এ কারণে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বাছাই করে আপনি ঐ সময়টাতে লাইব্রেরী ওয়ার্ক করুন। দেখবেন ভালো স্টুডেন্ট হয়ে ওঠা খুবই সহজ হয়ে যাবে।

৫. খারাপ বন্ধু ত্যাগ করুন :

ভালো স্টুডেন্ট হতে গেলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হল খারাপ বন্ধুগুলোকে ত্যাগ করতে হবে। খারাপ বন্ধু থাকলে আপনার সময়গুলো খুবই বাজেভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। পড়াশুনা করতে পারবেন না,এমনকি মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারেন। এ কারণে ভালোভাবে পড়াশুনায় মনোযোগ আনতে আপনি আপনার বন্ধুচক্র থেকে খারাপ বন্ধুদের বাদ দিয়ে দিন প্রয়োজনে কিছু ভালো বন্ধু যোগ করুন।

ভাল ছাত্র হওয়ার উপায়

এদেশে যার নম্বর বেশি সেই ভাল ছাত্র। নম্বর পাওয়া একটু কষ্ট করলে খুব সহজ।
১) টিচার ব্লাকবোর্ডে যা লিখে এবং মুখে যা বলে তা হুবুহু মুখস্থ করতে হবে। এজন্য খাতা আর টেপ রেকর্ডার ইউজ করতে পারেন। অনেক কাজে দেবে।
২) অতিরিক্ত স্মার্ট হবার চেষ্টা না করা। টিচার ইজ অলওয়েজ রাইট। এই নীতি অবলম্বন করতে হবে। কিপ্টেমি করে টিচারকে বা ডিপার্টমেন্টকে তোষামোদি করতে পারেন। যদিও এসবের দরকার নেই।
৩) ব্যবহারিক ক্লাসের ক্ষেত্রে আপনাক ইন্সট্রাক্টরকে বোঝাতে হবে আমি অনেক পরিশ্রম করছেন। আর ব্যবহারিক ক্লাসে কোন থিউরিটিকাল কিছু থাকলে সেখানে ইন্সট্রাক্টরের মুখের কথা বা বোর্ডের লেখা হুবুহু লিখতে হবে।
৪) পরিচিত হবার জন্য টিচার বা ইন্সট্রাক্টরকে এমন সব কোশ্চেন করতে হবে যার উত্তর সে জানে এবং খুব ভালভাবে দিতে পারবে। আটকানোর চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
৫) সর্বদা গ্রুপ স্টাডি করা উচিৎ। যারা কখনও এটা করেননি তারা বিশাল একটা জিনিষ মিস করছেন। দ্রুত শুরু করুন। এতে আপনার সময় অনেক বাঁচবে। ১০ ঘন্টার পড়া ২ ঘন্টায় হবে। এবং বাকী ৮ ঘন্টা আড্ডা মারতে পারবেন। একবার ভাবুন, সারা বছরের পড়া আপনি পরীক্ষার আগে যেখানে ১ মাসে শেষ করতেন, সেখানে গ্রুপ স্টাডি করলে কত কম সময় লাগত।
৬) একটু স্বার্থপর হতে হবে। সবাইকে সবকিছু দেবেন। তারপরও কিছু কিছু নিজের কাছে রেখে দেবেন।  এগুলোই আপনার সাথে অন্যদের পার্থক্য তৈরী করবে।
৭) সবসময় সিনিয়ারদের থেকে হেল্প নিন। নতুন করে বার বার চাকা (নোট) আবিস্কার করার কোন মানে নেই।
৮) ব্যবহারিকে ফাইনাল প্রেজেন্টেশনের সময় সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিন। ভিতরের কাজকে নয়। সোজা কথায়, যেটা চোখে দেখা যায় সেটা যেন অবশ্যই দৃষ্টিনন্দন হয়।
৯) ক্লাসের তথাকথিত ভাল ছাত্র/ছাত্রীর সাথে সর্বদা ভাল সম্পর্ক রাখবেন।
১০) মুখস্থবিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা।
কোন কিছু যদি কোনরকম কুলকিনারা না করতে পারেন তাহলে হাফেজের মত মুখস্থ করবেন।
(এটাকে আমরা বলতাম "গোমা" (কপিরাইটেড!), এই ফোরামের কেউ কেউ এটার কথা শুনে থাকবেন।)

আরো দেখুন ভাল ছাত্র হওয়ার উপায়

আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেকের মেধা সমান। প্রত্যেকেই যোগ্যতা রাখে তথাকথিত ভালো ছাত্র হওয়ার। তাহলে এর সমাধান কি?
বিভিন্ন ধরনের বিদ্যালয়ের যে ধাপগুলো এখানে বললাম তার পেছনের অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অমনোযোগিতা।
ব্যাপারটা এখন এতটাই গুরুতর যে, কোচিং সেন্টার ও বাসায় শিক্ষক থাকার ফলে বাচ্চারা এখন আর শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ দেয় না।
এতে যে বাচ্চাদেরই শুধু ক্ষতি হচ্ছে তাই নয়, অপমানবোধে ভোগেন অনেক শিক্ষকও।
অথচ শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ দিলে সময় ও অর্থ নষ্টকারী দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিদ্যালয়গুলোর দ্বারস্থ হতে হয় না আমাদের।
অমনোযোগের প্রধান কারণ হচ্ছে পেছনের দিকে বসা।
পেছনে বসার ফলে অনেকের আড়ালে থেকে থেকে ফুল–পাখি–লতা পাতা দেখা ও আঁকার মতো আরও অনেক অপ্রাসঙ্গিক কাজ করা হয়ে থাকে।
ফলস্বরূপ দিন দিন পিছিয়ে পড়তে হয়। গড়ে উঠে ফার্স্ট বেঞ্চ-লাস্ট বেঞ্চ বৈষম্য।
মনোযোগ বাড়ানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে তাই সামনের সারিতে বসা। বিশ্বাস হচ্ছে না? একদিন বসে দেখো, টনিকের মতো কাজ করবে।
বলতেই পারো, সবাই যদি প্রথমে বসতে চায় তাহলে জায়গা হবে কেমন করে? তাদের জন্য বলছি, সবাই কি আমার কথাগুলো পড়বে?
যদিও বা পড়ে, বিশ্বাস করবে? করবে না। তো, কাল থেকে প্রথম সারির প্রথম সিটটা তোমার।
আজ যদি তুমি মাঝারি বা শেষের সারির ছাত্র হয়ে থাকো, কাল থেকে ভালো ছাত্রের তকমাটা অপেক্ষা করবে তোমার জন্য।

Rangpur Today
Related Posts
Previous
« Prev Post