লেখাপড়া বিষয়ে যে ৭টি বাজে অভ্যাস ত্যাগ করা প্রয়োজন এবং পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার ৯টি দারুণ কার্যকর টিপস

আমাদের সবারই লেখাপড়ার বিষয়ে কিছু বাজে অভ্যাস থাকে।
নিজের বিষয়ে এ সমস্যার কথা আপনার জানা থাকতেও পারে, নাও পারে।
এই বদভ্যাসের প্রতিদান শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফলের মধ্য দিয়ে পাওয়া যায়।
তাই এ থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি। এখানে জেনে নিন, এমনই ৭টি বদভ্যাস যা শিক্ষাজীবনে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

লেখাপড়া বিষয়ে যে ৭টি বাজে অভ্যাস ত্যাগ

১. প্রতিকূল পরিবেশে লেখাপড়া করা : সব পরিবেশে লেখাপড়া করা যায় না। প্রতিকূল পরিবেশ যেকোনো দিক থেকে হতে পারে।
যে চেয়ারে বসেছেন সেটি হয়তো মোটেও স্বস্ত…িকর নয়।
কিছুক্ষণ পরই পিঠে ব্যথা হয়ে যেতে পারে। আবার যেখানে পড়ছেন তার আশপাশে হয়তো প্রচুর আওয়াজ। সেখানে পড়াশোনা সম্ভব নয়।
২. চিন্তার সাগরে ভেসে যাওয়া : পড়ার টেবিলে বসে হঠাৎ চিন্তার অতলে তলিয়ে যাওয়া বাজে অভ্যাস। গুরুত্বপূর্ণ পড়া বোঝার সময় যদি কোনো অন্তরঙ্গ কথোপকথন বা বাজে কোনো সমস্যার সমাধানের চিন্তায় ডুবে যান, তাহলে পড়ার বাকি কাজটুকু সারা অসম্ভব হয়ে যাবে।
৩. ভুল পার্টনার বেছে নেওয়া : অনেকে লেখাপড়ার গ্রুপ বা পার্টনার বেছে নেন। জটিল বিষয় নিয়ে একসঙ্গে পড়লে বেশ সুবিধা হয়। একে অপরকে সহায়তা করতে পারে। কিন্তু পার্টনার বাছাইয়ে ভুল হলেই সেরেছে, লেখাপড়া মাথায় উঠবে। যার লেখাপড়ায় আগ্রহ নেই বা যার সঙ্গ পাওয়ামাত্রই আপনি অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তাকে নিয়ে পড়ার কাজ হবে না।
৪. অতিরিক্ত কম বা বেশি নোট নেওয়া : ক্লাসে শিক্ষক যা বলেন তার সম্পর্কে খুব বেশি বা কম নোট নেওয়া উচিত নয়।
বেশি কম নোট নিয়ে কোনো লাভ হয় না। আবার অনেক বিস্তারিত নোট নিলে আসল বিষয় গুলিয়ে ফেলবেন।
কাজেই নোট নিতে হবে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু।
৫. বইয়ের তথ্য হাইলাইট করা : তথ্য সংগ্রহ বলতে যদি শুধু বইয়ের নানা তথ্য হাইলাইট করা বোঝেন, তবে বিপদ।
অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি বা সেমিস্টারের পড়া বইয়ে দাগিয়ে শেষ করা যায় না। এতে শুধু কোনো নির্দিষ্ট অংশই চোখে পড়ে, গোটা বাক্যটাও দেখা হয় না।
৬. একগাদা বিষয় একযোগে পড়া : পড়ার টেবিলে বসে যদি অতিরিক্ত বিষয় একযোগে পড়া শুরু করেন, তাহলে কোনটিই পড়া হবে না। যত বেশি বিষয় নিয়ে বসবেন, লেখাপড়ায় জটিলতা তত বেশি সৃষ্টি হবে।
৭. গড়িমসি করা : এটাকে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে অভ্যাস বলা যায়।
যে বিষয়টি পড়তে হবে তা গড়িমসি করে রেখে দেওয়া সবচেয়ে ক্ষতিকর। কাল সময় রয়েছে, কাজেই আজ থাক-
এভাবে পড়াশোনা এগিয়ে নেওয়া যাবে না। অথবা পড়ার সময় মনে হলো।
নতুন জামার ডিজাইন করাটা খুবই জরুরি এবং তা নিয়ে বসে পড়লেন। আর এতেই যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়ে যাবেন।

পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার ৯টি দারুণ কার্যকর টিপস

পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার শিক্ষা জীবনের আসল ভয় পরীক্ষা। কতাই আছে  শিক্ষা জীবন বড়  সুখের জীবন  জদিনা থাকত  পরীক্ষা।
আর বাকিটুকু অনেক মজার সময়। বন্ধু-বান্ধব, লেখাপড়া, আর  ঘুরে বেড়ানো, আড্ডা সবইকে  অনেক ভালো লাগে।
কিন্তু  মধ্যে রাজ্যের যতো টেনশন চলে আসে পরীক্ষার সময় এগিয়ে আসলে।
তাই শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের ৯টি দারুণ পরামর্শ।
বিশেষ পদ্ধতিতে পড়াশোনার কাজটি চালিয়ে গেলে পরীক্ষার সময় কাঁধে দুশ্চিন্তা ভর করবে না।

১. বিশেষ অংশ এবং পরিকল্পনায় রঙিন কোড করুন

লেখা-পড়ার অন্যতম কার্যকর ১ টি উপায় এটি। পড়ার কাজটি কীভাবে চালিয়ে যাবেন তার ১ টি  পরিকল্পনা  নিশ্চয়ই থাকে।
এই অংশটিসহ নোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো রঙিন মার্কার দিয়ে চিহ্নিত করে রাখুন।
ভিন্ন ধরনের অংশের জন্য বিভিন্ন রঙ ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ।
যেমন- কুইজের অংশ গোলাপি, বিভিন্ন টেস্ট হালকা সবুজ, আন্ডার লাইনে  অংশ হালকা নীল ইত্যাদি।
এই কালার কোড সিস্টেম গুছিয়ে পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করার কার্যকর একটি উপায়।

২. সময় বের করুন

সেমিস্টারের আগের রাতে সব পড়ে শেষ করা অসম্ভব ব্যাপার। তাই বেশ কিছু দিন সময় বের করে রাখুন। অল্প সময়ের মধ্যে পড়ে পরীক্ষার ঝামেলা মেটানো যায়। কিন্তু সে পড়ায় শেখা হয় না। ফলে ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে হবে। তাই বেশ কিছু দিন হাতে নিয়ে হালকা মেজাজে পড়লেও শিখতে পারবেন। এতে পরীক্ষা হয়ে আসবে আরো সহজ, এবং অনেক ভাল।

৩. শিক্ষকদের সাতে দেখা করুন

আপনার শিক্ষক কখনোই আপনাকে ফিরিয়ে দেবেন না। তাদের কয়েকজন ভীতিকর হতে পারেন। কিন্তু সবকিছুর শেষে তিনিই আপনার শিক্ষক। শেখা বা পরামর্শ নিতে তার কাছে গেলে তিনি তার শিক্ষার্থীকে বহু যত্নে শিখিয়ে দেবেন। আপনার সমস্যা মেটাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন যেকোনো শিক্ষক। কাজেই পরীক্ষা বিষয়ে পরামর্শ পেতে শিক্ষকদের দ্বারস্থ হন। তাহলেই ভাল রেজাল্ট করা সম্ভম।

৪. বইয়ে কি-পয়েন্ট হাইলাইট করুন?

অনেক ধরনের পরীক্ষা রয়েছে সেখানে বই দেখে পরীক্ষা দেওয়া যায়। এসব ক্ষেত্রে বইয়ের কি-পয়েন্টগুলো হাইলাইট করে নিন। আর বই দেখার সুযোগ না থাকলেও পড়াশোনার সুবিধার জন্য নিজের বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মার্কার দিয়ে হাইলাইট করে রাখুন। সেগুলো বারবার দেখে নিতে সুবিধা হবে।

৫. স্লাইড শো বানিয়ে পড়া শুনা করুন

ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করুন। বিশেষ নোটগুলোকে কম্পিউটারে স্লাইড শো বানিয়ে পড়ুন। এতে মনে ভালোমতো ঢুকে যাবে সবকিছু।

৬. নিজের পরিকল্পনা বানিয়ে পড়া শুনা করুন

পড়াশোনাকে দারুণ কার্যকর করতে হলে পরিকল্পনা দরকার। পড়াশোনার, বিষয় আর পড়ার পদ্ধতি সবকিছু নিয়ে সময়সূচি করে নিন। তারপর সেই সময় অনুযায়ী পড়াশোনা চালিয়ে যান।

৭. নিজের  পরীক্ষা নিজেই  দিন

প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার মতো করে বন্ধুরা একসাতে বা আপনি একাই পরীক্ষা দিতে পারেন। এতে মূল পরীক্ষা নিয়ে যতো অজানা আশঙ্কা কেটে যাবে আপনার। অধিকাংশ  যে ক্ষেত্রে দেখা গেছে এসব পরীক্ষামূলক পরীক্ষা মূল পরীক্ষার কাছাকাছি হয়ে থাকে।

৮. একই পড়া কয়েকবার পড়ুন

কয়েকবার করে দেখে নিন। এতে মাথায় বসে যাবে সবকিছু। নোটের বিশেষ পয়েন্টগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিন। বারবার মুখস্থ করতে হবে না। হাইলাট করা অংশগুলোতেও চোখ দিন। একবার মুখস্থ করে কয়েকবার শুধু দেখলেই তা ঠোঁটস্থ হয়ে যাবে।

৯. গড়িমসি করবেন না

যা পড়তে হবেই তা পড়ছি পড়বো বলে ফেলে রাখবেন না। অন্তত পরীক্ষা এগিয়ে এলে এমনটি করার সুযোগ নেই। এ কাজটির জন্যই পরীক্ষার আগের রাতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কাজেই অল্প-বেশি পড়ার কাজ চালিয়ে যান। দেখবেন, পরীক্ষা আগ দিয়ে প্রায় সব প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছেন আপনি।

Rangpur Today
Related Posts
Previous
« Prev Post